সুবল সাহা,
পিন্টু মাইতি,
বরানগরের স্বনামধন্য ক্লাব আলমবাজার নবজ্যোতি সংঘের উদ্যোগে ৫ জুলাই রবিবার ক্লাব প্রাঙ্গণে আয়োজিত হয় ১৫ তম বর্ষ স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবির। এক হাজার রক্তদাতার লক্ষ্যমাত্রা রেখে একই দিনে করোনার প্রভাবে সোশ্যাল ডিসট্যান্স বজায় রাখতে অসুবিধা হতে পারে- এই চিন্তা করে নবজ্যোতি সংঘ জুলাই মাস জুড়ে প্রতি রবিবার রক্তদান শিবিরের যে আয়োজন রেখেছে এদিন ছিল তার শুভ সূচনা। রক্তদান শিবিরকে কেন্দ্র করে উক্ত দিন এলাকায় ছিল সাজো সাজো রব। বিপুল সংখ্যক মানুষ ছুটে এসেছিলেন ক্লাব সম্পাদক পুলক ঘোষের আহবানে সাড়া দিয়ে জমায়েত হতে। করোনার আবহে দীর্ঘদিন মনমরা হয়ে থাকা স্থানীয় মানুষজন আলমবাজার নবজ্যোতি সংঘের মহতী কাজে সামিল হয়ে অন্তত মুখের হাসি ফুটিয়েছেন।
বিশেষ করে মানবিকতার তাগিদে মানব দেহকে সুস্থ ও মুমূর্ষু রোগীদের প্রাণ বাঁচানোর কোমল নিবেদনের মাধ্যমে রক্তদাতারা নিজেদের সামাজিক দায়বদ্ধতা পালনে এগিয়ে এসেছিলেন। বিপুলসংখ্যক রক্তদাতার জন্য স্থানাভাবে ক্লাব প্রাঙ্গণের দুটি স্থানে ও ব্লাড ব্যাংকের দুটি মোবাইল বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
পিপলস্ ব্লাড ব্যাংক ও কোঠারি মেডিক্যাল-এর সহযোগিতায় মহিলা-পুরুষ সহযোগে ৪৩৪ জন স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন।
ওইদিন রক্তদান শিবিরে উপস্থিত ছিলেন দমদম লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ সৌগত রায়, বরানগর পৌরসভার বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর চেয়ারপার্সন অপর্ণা মৌলিক, বরানগর পুরসভার বিদায়ী কাউন্সিলর সুস্মিতা চ্যাটার্জি, গীতা দেবী গুপ্তা, কামারহাটি পৌরসভার বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সদস্য নবীন ঘোষাল, সমাজসেবিকা মৌসুমী ভট্টাচার্য, প্রাক্তন কাউন্সিলর অনিন্দ্য চৌধুরী, যুব তৃণমূল নেতা রবীন বিশ্বাস, গৌর মালাকার সহ অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ।
ক্লাব সম্পাদক পুলক ঘোষ বলেন, একদিকে যখন করোনা এবংঅন্যদিকে আমফান এসে জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে, সে সময় দাঁড়িয়ে নবজ্যোতি সংঘের প্রতিটি সদস্য দুর্গত মানুষের পাশে ছিল। সেই ধরনের অকস্মাৎ সামাজিক সংকট ছাড়াও গ্রীষ্মকালীন রক্তসংকট দূর করতে বিগত ১৪ বছর ধরে স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবিরের আয়োজন করতে পারে তাঁরা আনন্দিত। তিনি সকল সদস্যবৃন্দ ও রক্তদাতাদের ধন্যবাদ জানান।
ঐদিন সৌগত রায়, অপর্ণা মৌলিক, নবীন ঘোষাল, অনিন্দ্য চৌধুরী সহ সকলেই পুলক ঘোষের প্রশংসা করেন। বর্ষীয়ান নাগরিক প্রাণতোষ চট্টোপাধ্যায়, কমল দাশ, নিমাই ঘোষ, নির্মল রায়চৌধুরী উপস্থিত থেকে রক্তদাতাদের উৎসাহিত করেন। বিশিষ্ট সমাজসেবী তথা গণআন্দোলনের নেতা গণপতি মজুমদার অসুস্থতার কারণে আসতে না পারলেও অনুষ্ঠানের সাফল্য কামনা করে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠান সংগীতশিল্পী কুণাল ঘোষের আবহসংগীত ও সুরঞ্জন ঘোষের ভব্য সঞ্চালনার মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি অন্য মাত্রা পায়।