খায়রুল আনাম (সম্পাদক সাপ্তাহিক বীরভূমের কথা )
শাসক-বিরোধী বিবাদে বিদ্যুতের খুঁঁটিতে বেঁঁধে মারধরের অভিযোগ
রাজনৈতিক দিক থেকে দীর্ঘদিন ধরেই উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে বীরভূমের বোলপুর বিধানসভার অধীন ইলামবাজার থানা এলাকা। এখানকার বিধায়ক শাসক দলের চন্দ্রনাথ সিংহ রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী হওয়ার সুবাদে এই এলাকাটি রাজনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্ব পেয়ে থাকে। বিগত লোকসভা ভোটের পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে, এলাকায় বিজেপি যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করেছে ভোট প্রাপ্তির নিরিখে। তাই, আগামী বিধানসভা ভোটের আগে দলীয় কর্মীরা যাতে কোনওভাবেই বিজেপির সাথে সঙ্ঘাত- সঙ্ঘর্ষে না জড়ান, সে ব্যাপারে তিনি ইলামবাজারে দলীয় কর্মী সম্মেলনে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা গিয়েছে, তাঁর সেই সতর্কবার্তাকে দলীয় কর্মীরা ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে বার বার বিজেপির সঙ্গে সঙ্ঘাত- সঙ্ঘর্ষে জড়িয়েছে। জয়দেব- কেন্দুলী, সাহাপুর, বদিপুর, ছোটচক প্রভৃতি গ্রাম তার সাক্ষ্য বহন করছে। দল ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও, কেন পুলিশ তাঁদের কর্মীদের গ্রেফতার করেছে, দলীয় কর্মী সম্মেলনে দলীয় কর্মীদের কাছ থেকে এমন মন্তব্যও শুনতে হয়েছে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহকে। এই পরিস্থিতিতে এবার আবারও ইলামবাজারে এক বিজেপি কর্মীকে মারধর করার অভিযোগে নাম জড়ালো শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের। আর এই মারধরের ঘটনায় নির্মমতা এবং বর্বরোচিত আক্রমণের অভিযোগও উঠেছে। ইলামবাজারের শীর্ষা গ্রাম পঞ্চায়েতের শোলা গ্রামের বাসিন্দা, পেশায় ভাঙাচোরা সামগ্রী কেনার ব্যবসায়ী বিজেপি সমর্থক শেখ মোজাম দিন কয়েক আগে বিজেপির একটি মিছিলে অংশ গ্রহণ করেছিলেন। সেই থেকে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা তাঁকে হুমকি দিচ্ছিলো বলে অভিযোগ। শেখ মোজামের স্ত্রী জ্যোৎস্না বিবি ইলামবাজার থানায় লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন যে, তাঁর স্বামী বিজেপি করার অপরাধে, তিনি দুপুরের দিকে বাড়ি ফেরার সময় তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা তাঁকে রাস্তায় ধরে বেধড়ক মারধর করে। পরে তাঁকে বিদ্যুতের খুঁঁটিতে বেঁঁধে মারধর করা হয়। তাঁর ডান হাতে ছুরি দিয়েও আঘাত করা হয়। পরে গ্রামের কিছু মানুষ তাঁকে উদ্ধার করে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে ইলামবাজার ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি ফজলুল রহমান বলেছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের বদনাম করার জন্যই, তাঁদের নাম জড়িয়ে বিজেপি এমন সাজানো ঘটনা ঘটিয়েছে। অপর দিকে বিজেপির ইলামবাজার ব্লক সভাপতি চিত্তরঞ্জন সিংহ অভিযোগ করেছেন যে, শেখ মোজাম তাঁদের দলীয় কর্মসূচীতে যোগ দেওয়ার কারণেই তৃণমূল কংগ্রেস পরিকল্পনা করেই তাঁর উপরে হামলা চালিয়েছে। এই অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগকে কেন্দ্র করে এলাকার পরিস্থিতি যে আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে, সেটাই মনে করছেন এলাকার মানুষজন ।।