বিনা উর্দিতে পুলিশ ট্রাফিক জরিমানা আদায় করতে পারেনা ; হাইকোর্ট

Spread the love

মোল্লা জসিমউদ্দিন (টিপু)

রাস্তাঘাটে প্রায়শ যানবাহন চালকদের উপর পুলিশি জুলুমবাজির অভিযোগ উঠে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তোলাবাজির অভিযোগ প্রায়শ শোনা যায়। ঠিক এহেন ক্ষেত্রে সাদা পোশাকের পুলিশের  দৌরাত্মটা বেশি লক্ষণীয়। কে ড্রাইভার, কে সিভিক আর কেই বা পুলিশ অফিসার?  তা বোঝা বড়ই দায়!  গত বৃহস্পতিবার  কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের বেঞ্চে এক মামলার রায়দানে বিচারপতি তাঁর আদেশনামায় উল্লেখ রাখেন – ‘ ট্রাফিক জরিমানা আদায়ের ক্ষেত্রে পুলিশের উর্দি পড়া আবশ্যিক’। তাছাড়া সাদা পোশাকের পুলিশ কোন গাড়ি চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করতে পারবেনা। ওই মামলা সাদা পোশাকের পুলিশ যে বেআইনী কাজ করেছেন তা মামলার পর্যালোচনায় বিচারপতি জানিয়েছেন। ওই পুলিশ অফিসার কে সর্তকও করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের এজলাসে বিধাননগরের এই আইনজীবীর জোর পূর্বক ড্রাইভিং লাইসেন্স কেড়ে নেওয়া এক সাদা পোশাকের পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে মামলা উঠে। অনলাইন শুনানিতে উঠে আসে – বিধাননগরে সূর্যনীল দাস নামে এক আইনজীবী গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিধাননগর (পূর্ব) থানার বি.কে – বিএল পার্কে গাড়িতে থাকার সময় এক সাদা পোশাকের পুলিশ ‘নো পার্কিং’ বিধি না মানার অভিযোগে ‘আইনজীবী’ চালকের  ড্রাইভিং লাইসেন্স কেড়ে নেন। শুধু তাই নয় ওই আইনজীবীর আরও দাবি – ‘সাদা পোশাকের পুলিশ অফিসার উর্দি তে না থেকে এহেন ট্রাফিক জরিমানা আদায় করতে পারেন না ‘। এই ঘটনায় ড্রাইভিং লাইসেন্স সিজার লিস্টে অন্তভূক্ত পর্যন্ত হয়নি। অভিযোগ পাল্টা অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়। গত বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের ভিডিও কনফারেন্সে সরকারি আইনজীবী জানিয়েছেন -‘ ওই গাড়ি চালক  ‘নো পার্কিং’ বিধি মানেননি। তাছাড়া বিধাননগর পূর্ব থানার ওসি ওই গাড়ি চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স ফিরিয়ে দিয়েছেন’। উভয়পক্ষের অনলাইন সওয়াল-জবাব শুনে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য তাঁর আদেশনামায় জানিয়েদেন – ‘ ওই সাদা পোশাকের পুলিশ অফিসার বেআইনী কাজ করেছেন।  ট্রাফিক জরিমানা আদায় করতে গেলে পুলিশ কে উর্দিতে থাকতে হবে’।  ওই পুলিশ অফিসার কে কলকাতা হাইকোর্ট সর্তকও করে থাকে।  

অপরদিকে কলকাতা হাইকোর্টে বিধাননগর পুরসভার প্রাক্তন মেয়র তথা বিজেপির রাজ্য নেতা সব্যসাচী দত্ত   এফআইআর খারিজের আবেদন নিয়ে মামলা দাখিল করেন। কলকাতা হাইকোর্ট এই বিজেপি নেতার এই মামলা গ্রহণ করেছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলাটি উঠে। সেখানে হাইকোর্ট সংশ্লিষ্ট থানা অর্থাৎ লেকটাউন থানা কে পরিস্কারভাবে জানিয়েছে – ‘পরবর্তী নির্দেশ না অবধি কোন কড়া পদক্ষেপ নিতে পারবেনা পুলিশ’। সেইসাথে এই মামলার কেস ডাইরি তলব করেছে কলকাতা হাইকোর্ট।উল্লেখ্য, গত ৮ জুন লেকটাউনের ব্যাঙ্গুর এলাকায় বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র তথা বিজেপির রাজ্য নেতা সব্যসাচী দত্ত এক কর্মসূচিতে গেলে হামলার শিকার হন। অভিযোগ, শাসকদলের কর্মীসমর্থকেরা সব্যসাচী দত্ত কে প্রহৃত করে থাকেন। কেন্দ্রীয় সরকারের নিরাপত্তা প্রাপক বিজেপির এই নেতার উপর হামলা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে আলোড়ন পড়ে যায়। এই মামলায় শাসকদলের কর্মীসমর্থকদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয় লেকটাউন থানায়। কাউন্টার পুলিশ কেস ( জিআর)  ছবি দত্ত নামে এক তৃণমূল সমর্থক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সব্যসাচী দত্ত এর বিরুদ্ধে। এই মামলায় গ্রেপ্তারি আশংকা করে দ্রুত কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হন সব্যসাচী দত্ত। ওই মামলাটি খারিজ করার আবেদন রাখেন কলকাতা হাইকোর্টে।গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টে ভিডিও কনফারেন্সে এই মামলায় বিচারপতি তাঁর আদেশনামায়  জানিয়েদেন – ‘ এই মামলার পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া অবধি সব্যসাচী দত্ত এর বিরুদ্ধে কোন কড়া পদক্ষেপ নিতে পারবেনা লেকটাউন থানার পুলিশ’। সেইসাথে এই মামলার কেস ডাইরি তলব করেছে কলকাতা হাইকোর্ট।এই মামলায় আবেদনকারী সব্যসাচী দত্ত এর পক্ষে আইনজীবী রয়েছেন রাজদীপ মজুমদার।                                                                                                                                                                                                                                            

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *