বোনফোঁটা

Spread the love

বোনফোঁটা

‘বারো মাসে তেরো পার্বণ’ নিয়ে আমরা বাঙালিরা এমনিতেই উৎসবমুখর থাকি প্রায় সারা বছর। অথচ বর্তমান সমাজের অর্থনৈতিক অবস্থা সমাজের বেশিরভাগ মানুষের কাছেই প্রতিদিন নতুন নতুন উদ্বেগের সৃষ্টি করছে। এবার তের পার্বণকে যদি চোদ্দো পার্বণে নিয়ে যাওয়া হয়, মৃদু আপত্তি ওঠার সম্ভাবনা থেকেই যায় একটা।

কিন্তু না, বাঙালি মাত্রই সৃজনশীল পার্বণকে সে যতই নব্য হোক না কেন, তাকে ধরে রাখার চেষ্টা করে সতত। আর নব্য সৃজন যদি হয় সমাজকে নতুন পথ দেখানোর জন্য, সেখানে বাঙালি সচেতনতা যথেষ্ট সক্রিয়ভাবে ক্রিয়াশীল থাকে, ইতিহাস পর্যবেক্ষণ তাই বলে।

‘মনন’ সাহিত্য গোষ্ঠী বা ‘চন্দ্রপুর মনন ফর লিটারেচর’ নিত্যনতুন সৃজনশীল কাজে গত প্রায় অর্ধ দশকের বেশি সময় আমাদের বাঙালি সমাজে কাজ করেই চলেছে। একদিকে যেমন নবীন-প্রবীণ লেখকদের নিয়মিত উৎসাহ প্রদান করতে ‘মনন’ সাহিত্য ম্যাগাজিন নিয়মিত প্রকাশ হয়েই চলেছে, ঠিক তেমনই গত অর্ধ দশক ধরেই বাংলার জেলা ধরে ধরে সেখানে অর্থনৈতিক পিছিয়ে পড়া মানুষের মাঝে ( বিশেষত নারী, শিশু, বৃদ্ধ, বৃদ্ধাদের ) পাশে দাঁড়িয়ে তাদের মুখে মুহূর্তের হাসি ফোটানোর চেষ্টা করেই চলেছে ।

এইবছর, ‘কোভিড’ মানুষের সব আনন্দ কেড়ে নিয়েছে বলা চলে । এরই মাঝে দাঁড়িয়ে একেবারে প্রায় প্রথম প্রকাশ্যে আগামী ২২ শে নভেম্বর, ২০২০ ‘বোনফোঁটা’ অনুষ্ঠানের ডাক দিয়ে সমাজে একটা নতুন স্রোতের সৃষ্টি করেছে বলা চলে ‘চন্দ্রপুর মনন ফর লিটারেচর’। সকল গুণী ও প্রাজ্ঞ ব্যক্তিদের সাথে নিয়ে একটাই বার্তা এবার ‘বোনফোঁটা’-য় ।
বোনের কপালে দিলাম ফোঁটা
‘নারী–লাঞ্ছনা’ পড়ল কাটা ।

পৌরাণিক দৃষ্টিকোণ থেকে নেওয়া চিত্রকল্পে পূর্ণ যৌবনের অধিকারী যম তার সহোদরা ও পূর্ণ যৌবনবতী যমীকে যে কুপ্রস্তাব করেছিলেন, সংযমী যমী নিজেকে একদিকে সংযমের ডোরে বাঁধলেন, অপরদিকে ভ্রাতৃত্বের আলিঙ্গনে যমকেও বাঁধলেন ‘ভাইফোঁটা’-র বাহুডোরে। যমী যমের মৃত্যু-দুয়ারে ফেললেন কাঁটা।

সময়ের বিবর্তন কিন্তু প্রসারিত করলো নারীলাঞ্ছনাকে সমাজে আরো। তাই আমাদের একেবারে সদর্থক সমাজ-ভাঙনের ডাক এবার ‘মনন’ সাহিত্য সংস্থা থেকে – চলুন, আমরা বোনের কপালে এঁকে দিই ‘বোনফোঁটা’ আর চিরতরে নারী-লাঞ্ছনার শিকড়কে উপড়ে কেটে ফেলে এগিয়ে যাই নারী-পুরুষ লিঙ্গবৈষম্যের বাইরে, ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে সমাজকে বাঁধি নতুন করে।

আমাদের ২২ শে নভেম্বর, ২০২০ সমগ্র অনুষ্ঠানটির মিডিয়া পার্টনার ‘বাংলার খবরাখবর’ গোষ্ঠীকে ও আপনারা যারা প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে এই অনুষ্ঠানকে সফল করে তুলতে চাইছেন, সেই সকলকে ‘মনন’ সংস্থার পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা ।

        ‘চন্দ্রপুর মনন ফর লিটারেচর’ সংস্থার পক্ষে সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা স্নেহাশীষ চক্রবর্তী কর্তৃক প্রচারিত ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *