সে এক শতাধিক বছরের পূর্বের কথা। গ্রামের একটি পুকুর থেকে বট গাছের নিচে উঠে এসেছিল শিবলিঙ্গ। গ্রামবাসীদের নজরে আসতেই বটগাছের নিচেই শুরু হয় পূজার্চনা। প্রথমে তালপাতার ছাউনি ,পরে মাটির তৈরী আটচালা । এখন মন্দির প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে গ্রামবাসীদের কাছে শিবপুজো একটা বৃহৎ উৎসবের আকার ধারণ করেছে। এমনই নানান ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের মোহনপুর গ্রামের শিব পুজোয়। স্থানীয় সূত্রের জানা গেছে, এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবী নয়ন সামন্তর উদ্যোগে প্রায় ১৫ বছর আগে এই শিব মন্দির নির্মাণ করা হয়। বিগত প্রায় ৮-১০ বছর ধরে সমাজসেবী নয়ন সামন্তের ব্যবস্থাপনায় শিবরাত্রি উপলক্ষ্যে মোহনপুর গ্রাম হয়ে ওঠে মহামিলন ক্ষেত্র। প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও রীতিনীতি মেনে মোহনপুর গ্রাম থেকে দীর্ঘ প্রায় ৭ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে খড়ি নদী থেকে জল বয়ে আনেন প্রায় পাঁচ হাজার পণার্থী। মনস্কামনা পূরণের আশায় পুণ্যার্থীরা বাবার মাথায় জল ঢালেন । সকলের জন্য প্রসাদ, ভোগ বিতরণ এবং মহচ্ছবের আয়োজন করা হয়। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে প্রায় ১৩ হাজার মানুষের জন্য অন্নভোগের ব্যবস্থা করা হয়। সকাল থেকেই শুরু হয় পুজো পাঠ। হরিনাম সংকীর্তন এবং মৃত্যুঞ্জয় যজ্ঞের আয়োজন করা হয়। এলাকাবাসীরা জানান, শিবরাত্রি উপলক্ষে মোহনপুর গ্রামের প্রতিটি পরিবারের আত্মীয়-স্বজনরা দূর-দূরান্ত থেকে গ্রামে হাজির হন। আনন্দ উৎসবে মাতোয়ারা হয়ে ওঠেন গ্রাম সহ স্থানীয় হাজার হাজার মানুষ। সকল ধর্মের মানুষজন এই পুজোয় একসঙ্গে মিলিত হয়ে একে অপরকে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এলাকাবাসীরা বলেন, সমাজসেবী নয়ন সামন্তের ব্যবস্থাপনায় বিগত ১০ বছর ধরে শিবরাত্রি উপলক্ষে শিবপুজোয় আনন্দে মেতে উঠেন এলাকাবাসী। নয়ন বাবুর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন তারা।
ভাতাড় থেকে সেখ মিলন এর রিপোর্ট