ভাদু জাগরণ উৎসব

Spread the love

সাধন মন্ডল,

আজ ভাদু জাগরণ। রাঢ়বঙ্গের অন্যান্য উৎসব গুলির মধ্যে অন্যতম উৎসব ভাদু পুজো। কালের বিবর্তনে পশ্চিমী দুনিয়ার দাপটে ,মোবাইলে আসক্তি কারণে আজ এই সব লোকসংস্কৃতি উৎসব মুছে যেতে বসেছে বা হারিয়ে যাচ্ছে এই লোকসংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে আমাদের সচেষ্ট হতে হবে বলে জানালেন বিশিষ্ট লোক গবেষক, কবি সাহিত্যিক ,সাংবাদিক লক্ষীন্দ্র কুমার সরকার। তিনি বলেন ভাদু উৎসব বা ভাদু পুজো পুরুলিয়া বাঁকুড়া বীরভূম ও মেদিনীপুর জেলায় বেশি প্রচলিত। ভাদ্র মাসের প্রথম দিন ভাদু মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হতো বাড়িতে বাড়িতে সেখানে বাড়ির মেয়ে ও মহিলারাই এই পুজো করে থাকেন ।পুজোতে কোন পুরোহিত লাগে না পুজোতে নৈবেদ্য হিসেবে ফল উপকরণ চিড়েগুড়, বিভিন্ন মিষ্টি মিষ্টান্ন দেওয়া হয় । ভাদু পুজোতে ভাদুকে নিয়ে নানান ছড়া গান রয়েছে সেগুলি বাড়ির মহিলারা সুরের মাধ্যমে গেয়ে ভাদ্র সংক্রান্তিতে রাত্রি জাগরণ করে থাকেন আশ্বিন মাসের পহেলা তারিখে ভাদুকে নদীতে বা জলাশয়ে বিসর্জন দেওয়া হয়।কথিত আছে পুরুলিয়ার কাশীপুরের রাজা মেয়ে ছিল ভাদু বিয়ের দিন তার হবু স্বামী ডাকাত দলের হাতে নিহত হন তার মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে আত্মহত্যা করেন ভাদু ভাদুর মৃত্যুতে শোকে মূহ্যমান হয়ে পড়েন কাশিপুরের রাজা। ভাদুকে বাঁচিয়ে রাখতে তিনি ভাদু পুজোর প্রচলন করেন তারপর থেকে ই রাঢ়বঙ্গে ভাদু পুজো উৎসবের চেহারা নেয়। বর্তমানে এই ভাদু পুজো হারিয়ে যেতে বসেছে। ভাদু মূর্তিরবিক্রি বাটা কমেছে শিল্পীদের। টান পড়েছে অর্থনীতিতে। পাঁচমুড়ার বিশিষ্ট শিক্ষক তথা মৃৎশিল্পী বিশ্বনাথ কুম্ভকার বলেন আমরা আমাদের পুরানো সংস্কৃতিকে ভুলে যাচ্ছি হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের চিরাচরিত বিভিন্ন পুজো পার্বণ। অন্যান্য পুজো পার্বণের মধ্যে এই ভাদ্র মাসের ভাদু পুজো আজ তার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে একে ধরে রাখতে আমাদের সচেষ্টা হতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *