লকডাউনের ভীড়ের ছবি পোস্ট করা মামলায় লালবাজার কে ‘সুপ্রিম’ ধমক

Spread the love

মোল্লা জসিমউদ্দিন (টিপু),


অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র থেকে প্রত্যন্ত চাষি শিলাদিত্য চৌধুরী। আবার কংগ্রেস নেতা সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সাংবাদিক সফিকুল ইসলাম। এঁরা সবাই-ই রাজরোষে সাময়িক পুলিশি সন্ত্রাসের শিকার৷বাংলার বিরোধী দলের নেতারা প্রায়ই  অভিযোগ তুলতো – ‘এই রাজ্যে বাক স্বাধীনতাটুকু নেই ‘। এই ধরনের  অভিযোগের একপ্রকার আইনী স্বীকৃতি মিললো দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্টে এক মামলার শুনানিতে কলকাতা পুলিশের অতি সক্রিয়তা নিয়ে বিস্তর প্রশ্নচিহ্ন তুললো সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি  ডি.ওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি  ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। মামলার শুনানিতে ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ – ‘ সরকারের সমালোচনা করলে এফআইআর  করা যায়না, স্বাধীন দেশে নাগরিকের বাক স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া অনুচিত। পুলিশ  যদি বাক স্বাধীনতা কেড়ে নেয়, তাহলে তা রক্ষা করতে আদালত কে হস্তক্ষেপ করতে হয় ‘। কলকাতা পুলিশ কে এইধরনের এফআইআর রুজু করানোতে আগামীতে সর্তকও করেছে সুপ্রিম কোর্ট। কলকাতা পুলিশ কে একপ্রকার ভৎসনা করে সুপ্রিম কোর্ট  কলকাতা হাইকোর্টের আগেকার আদেশনামায় স্থগিতাদেশ জারী করে দেয়। উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্ট মামলাকারীর বিরুদ্ধে কলকাতা পুলিশের সামনে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিল। এই নির্দেশ কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হন দিল্লির বাসিন্দা রোশনী বিশ্বাস। তাতে কলকাতা হাইকোর্টের কলকাতা পুলিশের সামনে হাজিরার নির্দেশ এর উপর বৃহস্পতিবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট স্থগিতাদেশ দেয়। পাশাপাশি লালবাজারের অতি সক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন তুলে আগামীদিনে এই রুপ এফ আই আর রুজুর ক্ষেত্রে সর্তকও করেছে সুপ্রিম কোর্টের  বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালত সুত্রে প্রকাশ, করোনা আবহে গত মে মাসে দিল্লির বাসিন্দা কলকাতার রাজাবাজারের ধিকধিক ভীড় নিয়ে ছবি পোস্ট করেন সোশাল মিডিয়ায়। সেখানে রাজ্য সরকারের  করোনা সংক্রমণ এড়াতে চরম উদাসীনতা এবং পক্ষপাতভুক্ত আচরণ নিয়ে অভিযোগ তোলা হয়। এই ধরনের পোস্ট সোশাল মিডিয়ায় দেখে লালবাজারের সাইবার সেল ব্যবস্থা গ্রহণে উদ্যোগী হয় বলে জানা গেছে। বালিগঞ্জ থানায় ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত, সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরির চেস্টা সহ বিভিন্ন ধারায় মামলা দাখিল হয়। তাতে দ্রুত লালবাজারে তলব করা হয় রোশনি বিশ্বাস নামে দিল্লির বাসিন্দা কে। কলকাতা পুলিশের এহেন নোটিশের বিরুদ্ধে  কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হয়েছিলেন ওই মহিলা। তাতে কলকাতা হাইকোর্ট তদন্তকারী পুলিশ অফিসাসের সামনে হাজিরার নির্দেশ দেয়। কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশ কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হন মামলাকারী। সেখানে বৃহস্পতিবার  দুপুরে  সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি  ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ জারী করে থাকে। পাশাপাশি লালবাজার কে কড়া ধমক দিয়ে পর্যবেক্ষণে জানিয়ে দেয় -‘ পুলিশ যদি বাক স্বাধীনতা কেড়ে নেয়, তাহলে তা রক্ষা করতে আদালত কে হস্তক্ষেপ করতে হয়। সরকারের সমালোচনা করলেই এফআইআর করা যায়না। এটা স্বাধীন দেশ, যেখানে প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার হিসাবে বাক স্বাধীনতা রয়েছে ‘।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *