সুরজ প্রসাদ ,
ভাঙ্গা ঘরে শুয়ে শুয়ে মাঝে মধ্যেই ‘লাখ টাকার’ স্বপ্ন দেখতেন হরি মাঝি। কিন্তু তিনি তার মনের ইচ্ছা কোনও দিন কারও কাছে ব্যক্ত করতে পারতেন না। করবেনই বা কি করে? কারণ জন্ম থেকেই তিনি মূক ও বধির। দারিদ্র্যের তীব্র যন্ত্রণা একাই বুকে বয়ে বেড়াতেন। যেমন শারিরীকভাবেও তিনি প্রতিবন্ধী। কিন্তু ৩০ টাকায় একেবারে কিস্তিমাত। রাতারাতি বদলে গেল ভাগ্য। পূর্ব বর্ধমানের ভাতার থানার বামোশোর গ্রামের বাসিন্দা মূক ও বধির জন মজুর লটারি কেটে এক কোটি টাকার মালিক। সোমবার বিকেলে লটারির ফলাফল ঘোষণার পর ভাতার এলাকা রীতিমতো তোলপাড়। বামোশোর গ্রামে অনেকেই হরিকে দেখতে ভিড় করছেন। তবে প্রতিবেশীরা রীতিমতো হরিকে পাহাড়া দিচ্ছেন তার নিরাপত্তার জন্য। হরির বাড়ির লোকজন আনন্দে আটখানা।
বামোশোর গ্রামের ঢলদিঘির পাড়ের বাসিন্দা বছর বিয়াল্লিশের হরি মাঝি। বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী, বিধবা মা, এক ছেলে। এক মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। স্ত্রী পুতুল মাঝিও জন মজুরি করেন। ছেলে সুজন(১৮)অনেকদিন আগেই পড়াশোনা ছেড়ে জন মজুরি করে। মাটির বাড়িতে খড়ের ছাউনি। ছোট ছোট দু’টি ঘরে কোনও রকমে থাকতে হয়। বৃষ্টি হলে ঘরের চাল দিয়ে জল পড়ে। এমনই শোচনীয় অবস্থার মধ্যে দিন কাটাতে হয়।
পুতুলদেবী জানান তার স্বামী মাঝেমধ্যে লটারির টিকিট কাটতেন। এদিন ছেলে সুজনের কাছে ৩০ টাকা চেয়ে সকালের দিকে ভাতার বাজারে গিয়েছিলেন। পুতুল দেবী বলেন, টাকা নিয়ে ভাতার বাজারে গেলেও জানতাম না টিকিট কাটবেন। বিকেলে জানতে পারি এক কোটি টাকা লটারিতে পড়েছে। হরি মাঝি ও এদিন যখন জানতে পারেন তখন তিনিও আনন্দ চেপে রাখতে পারেন নি। তার বিধবা মা আর স্ত্রীকে ইশারায় বলছেন, তোমাদের জন্য ভালো বাড়ি তৈরি করে দেবো।