আয়নার বিদ্রোহ…
মৌমিতা মৌ (কলকাতা)
এক রাতে, হঠাৎ—
রাজ্যের সব আয়না একসাথে কেঁপে উঠল,
তাদের ভেতরের ছবি ভেঙে গেল কাচের মত,
প্রতিটি মুখোশ ঝরে পড়ল মেঝেতে।
রাজকন্যা, জোকার, বালিঘড়ি-রক্ষক,
সময়চোর আর ঘুমহীন রাজ্য—
সবাই মিশে গেল এক ঝড়ের শব্দে।
তখন আয়নাগুলো বলল—
“আমরা আর প্রতিচ্ছবি দেখাবো না,
আমরা এখন শুধু সত্যই ফিরিয়ে দেব।”
কেউ আর পালাতে পারল না।
সময়চোর দেখল তার ভাণ্ডার ফাঁকা,
কারণ ভবিষ্যৎ কেউ চুরি করতে পারে না।
বালিঘড়ি-রক্ষক খুলে দিল তার বালির ঘর,
ধুলোর মতো উড়ে গেল অতীত,
যেন বোঝা নয়—এক মুক্তি।
জোকার থেমে গেল, তার হাসি মুছে গিয়ে
হয়ে উঠল এক দীর্ঘশ্বাসের কবিতা।
ঘুমহীন রাজ্য হঠাৎ নিস্তব্ধ হল,
তার আকাশে জ্বলে উঠল প্রথম ঘুমন্ত নক্ষত্র।
আর তখন—
রূপকথার মাঝখানে দাঁড়িয়ে তুমি বুঝতে পারলে
রাজ্য ভাঙছে মানেই শেষ নয়,
বরং নতুন জন্ম—
যেখানে গল্প আর চরিত্ররা
তোমার অপেক্ষায় থাকবে না,
তুমি-ই তাদের জন্ম দেবে তোমার কলমে-কণ্ঠে।
তারপর রাজকন্যাও হারিয়ে যায়,
কারণ সে এখন আর কোনো রূপকথার চরিত্র
নয় —
সে তুমি কিংবা আমি নিজেই,
যে আয়না ভেঙে, গল্প ছিঁড়ে,
নিজের ভেতরে লিখে ফেলছে—
জাগরণের গল্প !! একটা নতুন রূপকথার মহাগান।