খায়রুল আনাম,
শেষ মুহূর্তেও যে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোটের প্রার্থী তালিকায় শাসক তৃণমূল কংগ্রেস কোনও পরিবর্তন আনবে না, তা স্পষ্ট। আর এই স্পষ্টবার্তাতেই বীরভূম জেলায় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, গোরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে দিল্লির তিহাড় জেলে বন্দি জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে দলের জেলা সভাপতি রাখা হলেও তার কোনও কর্তৃত্ব রইলো না। ইতিমধ্যেই তিহাড় জেলে গিয়ে অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে দলের নির্দেশে গিয়ে দেখা করে এসেছেন বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল ও অপর সাংসদ দোলা সেন। অনুব্রত মণ্ডল আসানসোল জেলে বন্দি থাকার সময় তারসাথে জেলার নেতারা নিয়মিত গিয়ে দেখা করতেন এবং যোগাযোগ রাখতেন বলে অভিযোগ উঠতো। কিন্তু তিহাড় জেলে সে সব বন্ধ। বাঘ অনুব্রত মণ্ডলকে খুব বেশিদিন জেলে রাখা যাবে না বা সে বেরিয়ে এলে তাকে বীরের সম্মান দেওয়ার কথা বলা হলেও, সেই সম্মান তিলক কবে অনুব্রতর কপালে উঠবে তা কেউ জানেন না। পরিস্থিতি যে এদিকেই যাবে তা আঁচ করেই দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানুয়ারির শেষে বীরভূমে এসে দল পরিচালনার জন্য কোর কমিটি গঠন করে দিয়ে যান এবং জেলায় দলের দায়িত্ব নিজের হাতে রাখেন। আর এই কোর কমিটিতে তিনি নিয়ে আসেন দলে অনুব্রত বিরোধী হিসেবে পরিচিত নানুরের শহীদ পরিবারের ফাইজুল হক ওরফে শেখ কাজলকে। আর এ থেকেই শুরু হয়ে যায় শাসক শিবিরের নতুন ধারার রাজনৈতিক অঙ্ক কষা। জেলায় দলীয় সাংসদ শেখ কাজল গোষ্ঠীর শতাব্দী রায় আর রামপুরহাটের বিধায়ক তথা রাজ্য বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার ড. আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নব জোয়ার যাত্রার আগে থেকেই নানুর থেকে নির্বাচিত দলের জেলা পরিষদ কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল কেরিম খানের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ পৌঁছে দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। আর তারই ফলশ্রুতিতেই এবার আব্দুল কেরিম খান পঞ্চায়েত ভোটে দলীয় মনোনয়নই পেলেন না। আর তাই তাকে বলতে হচ্ছে, আমাকেই শুধুমাত্র নয়, অনুব্রত ঘনিষ্ঠ অনেককেই টিকিট দেওয়া হয়নি। আর সেইসাথে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কারও উপরে আস্থা রাখতে না পেরে শুধুমাত্র অনুব্রত মণ্ডলের উপরে আস্থা রেখে বলতে পেরেছেন, আমরা অভিভাবকহীন। অনুব্রত মণ্ডল ফিরে না আসা পর্যন্ত নিষ্ক্রিয় থাকবেন। আর অনুব্রত মণ্ডল ফিরে এলে সক্রিয় হবেন বলেও জানিয়ে দিয়েছেন।।